সংগঠন পরিচিতি

প্রকৃতির অপরূপ মহিমান্ডিত পর্যটন নগরী এই বান্দরবান। বান্দরবান পার্বত্য জেলায় বিভিন্ন ভাষাভাষী পাহাড়ী-বাঙ্গালী অসাম্প্রদায়িক জনগোষ্ঠীর বসবাস। সম্প্রীতির বন্ধনের এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত হলো ভূস্বর্গ খ্যাত এই বান্দরবান। আমাদের সমাজে এমন কিছু মানুষ আছে যারা সমাজকে কিছু দিতে চায়, পাল্টে দিতে চায় সমাজের চেহারা। আমরা এমনি কিছু তরুণ মানবসেবা কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছি পার্বত্য জনপদ বান্দরবানে। মানবতার সেবায় আমরা আছি, আমরা থাকব এই স্লোগানকে কন্ঠে ধারণ করে আমরা বান্দরবান বাসীকে জানান দিই একটি সোনালী সকালের। গড়ে উঠে বান্দরবান ও দক্ষিণ চট্টগ্রামের মধ্যে প্রথম রক্তদানের সংগঠন-“বান্দরবান ইয়ুথ ব্লাড ডোনার গ্রুপ”। ২০০৮ সালের ১লা জুলাই অনাড়ম্বর অনুষ্ঠানের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে আত্মপ্রকাশ করে মানবতার সেবায় নিয়োজিত এই সংগঠনটি। আর ধীরে ধীরে বিভিন্ন কার্যক্রমের মাধ্যমে আমরা ছুটে চলছি আগামীর সম্ভাবনাময় ভবিষ্যতের দিকে। রক্ত দানের পাশা পাশি বিভিন্ন সেবা মূলক কার্যক্রমের মাধ্যমে আমরা সাধারণ মানুষের হৃদয়ে স্থান করে নিয়েছি। বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালনার মাধ্যমে সংগঠনের স্বেচ্ছায় রক্তদানে আগ্রহী রক্তদাতা সংগ্রহের কার্যক্রমও সমান গতিতে চলছে। বান্দরবানে রক্তের চাহিদার সিংহভাগই পূরণ করে থাকে বান্দরবান ইয়ুথ ব্লাড ডোনার গ্রুপ। সময় যত গড়িয়ে যাচ্ছে ততই এই সংগঠনের অগ্রযাত্রা বেড়ে চলেছে। আর তাই সংগঠনের রক্তদাতার সংখ্যা ২৬ জন থেকে বেড়ে বর্তমানে দাঁড়িয়েছে প্রায় ১১০০ জনে। এমন একটা সময় ছিল যখন স্বেচ্ছায় রক্তদানের জন্য কোন আগ্রহী ব্যক্তি খুজে পাওয়া যেত না। কিন্তু আগের সেই অবস্থা আজ আর নেই। আর এই অবদান অনেকাংশেই বান্দরবান ইয়ুথ ব্লাড ডোনার গ্রুপের। এই সংগঠনের বদৌলতেই রোগীদের রক্তের প্রয়োজনে রক্তদাতারা ছুটে যাচ্ছেন সেবা প্রার্থীদের দোরগোড়ায়। “রক্ত দিন জীবন বাঁচান” এই স্লোগানকে বাস্তবে রূপদানের মাধ্যমে সংগঠনের সদস্যরা মনুষ্যত্ব বিকাশের জন্য মানবিকতার চর্চায় রত হয়েছেন। বর্তমানে শুধু রক্তদানের মধ্যেই সংগঠনের কার্যক্রম সীমাবদ্ধ নয়। প্রতিষ্ঠলগ্ন থেকে শুরু করে আজ পর্যন্ত বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালনার মাধ্যমে বান্দরবান ইয়ুথ ব্লাড ডোনার গ্রুপ বান্দরবান বাসীর কাছের বন্ধুতে পরিণত হয়েছে। বিভিন্ন জাতীয় ও স্থানীয় পত্রিকায় আমাদের সংগঠনের কার্যক্রম বাস্তবিক অর্থের প্রশংসিত হয়েছ। সংগঠনের বিভিন্ন কার্যক্রম সম্বন্ধে বান্দরবানের প্রশাসন ও সুশীল সমাজের মূল্যায়ন বিশেষ করে বান্দরবানের উন্নয়নের পুরোধা পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মাননীয় মন্ত্রী এবং বান্দরবান ইয়ুথ ব্লাড ডোনার গ্রুপের প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে প্রধান পৃষ্ঠপোষক জনাব বীর বাহাদুর উশৈসিং এমপি মহোদয়ের পরামর্শ, সার্বিক সহযোগিতা আমাদের প্রচেষ্টাকে সামনের দিকে এগিয়ে নিতে অনুপ্রেরণা যুগিয়েছে। সংগঠনের একযুগ পূর্তিতে বান্দরবান বাসীর প্রতি রইল আমাদের অকুণ্ঠ ভালোবাসা। কথায় বলে- “মানুষ মানুষের জন্য, জীবন জীবনের জন্য” । তাই আসুন মানবিকতার চর্চায় আত্মনিয়োগ করি- এই হলো আমাদের সোনালী ভবিষ্যতের প্রত্যাশা।

সংগঠনের বাস্তবায়িত কর্মসূচি

* সংগঠনের উদ্যোগে বান্দরবান সরকারী কলেজ, বান্দরবান সরকারী মহিলা কলেজ, টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজে বিভিন্ন শিক্ষা বর্ষে বিনামূল্যে রক্ষের গ্রুপ পরীক্ষা করানো হয়েছে। শুধু তাই নয় বান্দরবান পৌর এলাকার বিভিন্ন ওয়ার্ডে বিনামূল্যে রক্তের গ্রুপ পরীক্ষা কার্যক্রমও পরিচালনা করা হয়েছে।

* এসব ক্যাম্প পরিচালনার মাধ্যমে স্বেচ্ছায় রক্তদাতা সংগ্রহ করা হয়েছে।করা হয়েছে।

* সংগঠনের পক্ষ থেকে এ পর্যন্ত অসহায় রোগীদের প্রায় ৩০০০+ ব্যাগ রক্ত দান করা হয়েছে।

* বান্দরবানের বিভিন্ন উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা যারা বিভন্ন সময়ে রক্ত দিয়েছেন তাদের মধ্যে ডোনার কার্ড বিতরণ করা হয়েছে।

* রক্তদাতাদের স্বেচ্ছায় রক্তদানে আগ্রহী করে তুলতে রক্তদাতাদের সম্মাননা প্রদান করা হয়েছে।

* বিভিন্ন সময়ে স্বাস্থ্য সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে বিভিন্ন র‌্যালী ও সেমিনারের আয়োজন করা হয়েছে।

* এতিম শিশুদের নিয়ে বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালনার অংশ হিসেবে হাফেজিয়া এতিমখানায় ও কালাঘাটা শিশু পরিবারে স্বাস্থ্য উপকরণ ও শিক্ষ উপকরণ বিতরণ করা হয়েছে ।

* প্রায় প্রতি বছরই গরীব ও দুঃস্থ মানুষের মাঝে আনুষ্ঠানিক ও ভ্রাম্যমান কর্মসূচির মাধ্যমে শীতবস্ত্র বিতরণ করা হয়েছে।

* বিভিন্ন জাতীয় দিবস উপলক্ষে বান্দরবান প্রেসকাব প্রাঙ্গনে ও সদর হাসপাতালে স্বেচ্ছায় রক্তদান কর্মসূচীর আয়োজন করা হয়েছে।

* সংগঠনের উদ্যোগে বান্দরবানের বিভিন্ন স্থানে বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা ও ঔষুধ বিতরণ করা হয়।

* কালাঘাটা শিশু পরিবারে প্রতিবন্ধী, এতিম ও শ্রমজীবি শিশুদের নিয়ে সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক প্রতিযোগীতার আয়োজন করা হয়েছে।

* শিক্ষার্থীদের মেধা বিকাশে জেলা ব্যাপি বিতর্ক প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়েছে।

* এছাড়াও দিবস ভিত্তিক কর্মসূচির অংশ হিসেবে বিভিন্ন প্রদর্শনী মেলায় স্টল প্রদর্শন, ক্রীড়া প্রতিযোগিতা, কুইজ প্রতিযোগিতা, সচেতনতামূলক প্রচার পত্র বিলি, বিভিন্ন প্রকাশনা, প্রামান্যচিত্র প্রদর্শন ও আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়েছে।